আসাম রাজ্যে বন্যার কারণে ৩০,০০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। বন্যার কারণে কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধসহ বেশ কয়েকটি সেতু ও রাস্তা তলিয়ে গেছে। আসাম গত কয়েকদিন ধরে বন্যার সাক্ষী হচ্ছে। আসামের ৩১টি জেলার মধ্যে ১৮টি ভারী বর্ষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ।
আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির (ASDMA) রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বনাথ, চিরাং, দারাং, ধেমাজি, ধুবরি, ডিব্রুগড়, গোলাঘাট, হোজাই, কোকরাঝাড়, লখিমপুর, নগাঁও, নলবাড়ি, সোনিতপুর, তামুলপুর, উদালগুড়ি, কাছাড় এবং কামরূপ এলাকায় বন্যার দ্বারা মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।আসামে গত পাঁচ দিনে ৯৯.১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা স্বাভাবিকের থেকে ৫ মিলিমিটার বেশি।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (IMD) বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আসামের বেশ কয়েকটি জেলা জুড়ে ‘খুব ভারী’ থেকে ‘অত্যন্ত ভারী’ বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। সোমবার গুয়াহাটিতে IMD-র আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্র (RMC) কোকরাঝার, চিরাং, বাকসা, বারপেটা এবং বোঙ্গাইগাঁও-এর মতো জেলাগুলিতে ভারী থেকে খুব ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে।
ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের মেঘালয়ে গত ৫ দিনে ২০১.৮ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২৭ মিমি, এবং নাগাল্যান্ডে গত ৫ দিনে ৮১ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২৩ মিমি বেশি।আসামের ৪৪৪টি গ্রামের ৩০,৭২৯ জন মানুষ বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ এবং কেউ কেউ তাদের বাড়ি ছেড়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
এখন পর্যন্ত সাতটি জেলায় ২৫টি ত্রাণ শিবির তৈরি করা হয়েছে এবং রাজ্য সরকার অন্যান্য জেলাগুলিকেও প্রস্তুত থাকতে বলেছে।
ডিজিটাল মাধ্যমে সরকারি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে যাতে মানুষ বাইরে বেরোনোর আগে তাদের এলাকার আবহাওয়া সতর্কভাবে নোট করে।
গুয়াহাটি এবং উত্তর গুয়াহাটি সংযোগকারী ব্রহ্মপুত্রে রাত্রিকালীন ফেরি পরিষেবা জলস্তর বৃদ্ধির কারণে স্থগিত রাখা হয়েছে। ASDMA-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বনাথ, নগাঁও ও নলবাড়ির তিনটি এলাকার বাঁধ বন্যার কারণে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আসাম-এর কোকরাঝাড়, দারং, গোয়ালপাড়া এবং নলবাড়ি সহ ১১টি জেলায় PWD রাস্তা, স্কুল, সরকারি অফিস, বাড়িঘর এবং অন্যান্য কাঠামোর মতো অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সূত্রের খবর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র ও বরাকসহ আসামের প্রধান নদীগুলো বর্তমানে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কেবল কামরুপ জেলার কপিলি নদী বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র কয়েকদিন বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও রোববার তা স্বাভাবিক হয়।