Close

‘মার্কিন চর’ ইভান গার্শকোভিচ কে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের সাথে বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব দিলেন রুশ সাংসদ ওবুকভ

পুতিন-বিরোধী রুশ সাংসদ 'মার্কিন চর' সন্দেহে গ্রেফতার সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচের সাথে জুলিয়ান আসাঞ্জের বন্দি বিনিময় দাবি করলেন।

'মার্কিন চর' ইভান গার্শকোভিচ কে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের সাথে বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব দিলেন রুশ সাংসদ ওবুকভ

মার্কিন চরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ পত্রিকার সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচ কে নিয়ে যখন হট্টগোল তুঙ্গে উঠেছে ও পশ্চিমা শক্তি তাঁর মুক্তি দাবি করছে, ঠিক তখন রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন-নেতৃত্বাধীন সরকারের কট্টর বিরোধী রুশ ফেডারেশনের কমিউনিস্ট পার্টির (কেপিআরএফ) সাংসদ সের্গেই ওবুকভ দাবি করলেন যে মস্কো যেন যুক্তরাজ্যের জেলে বন্দী উইকিলিক্সের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের সাথে গার্শকোভিচের বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব পশ্চিমাদের কাছে পেশ করে।  

প্রসঙ্গতঃ বৃহস্পতিবার, ৩০শে মার্চ, গার্শকোভিচ কে রুশ গোয়েন্দারা ইয়েকাতেরিনবুর্গ অঞ্চলে দেশের গোপন তথ্য পশ্চিমাদের সরবাহ করার সময়ে হাতে নাতে গ্রেফতার করে বলে মস্কো দাবি করেছে। পশ্চিমা শক্তিগুলো গার্শকোভিচ কে মুক্ত করার দাবি তুলেছে। রাশিয়ায় সরকার-বিরোধী, পশ্চিমাপন্থী সাংবাদিকরাও এই দাবিতে গলা মিলিয়েছে।  

ওবুকভ দাবি করেন যে স্বাধীন সাংবাদিকতা করার জন্যে এবং পশ্চিমা শক্তিগুলোর, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নানা কুকীর্তির তথ্য জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত করার জন্যে এক দশকের বেশি সময় ধরে অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাজ্যে বন্দী দশায় রয়েছেন। তাঁকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সমর্পণ করার প্রক্রিয়া যুক্তরাজ্যে চলছে তাঁর মুক্তির দাবিতে সাংবাদিকদের ও গণতান্ত্রিক সংগঠনগুলোর চলমান ব্যাপক আন্দোলন কে উপেক্ষা করে।

২০১০ সালে উইকিলিক্স ‘কোল্যাটেরাল মার্ডার’ নামক একটি ভিডিও প্রকাশ করে যাতে মার্কিন সেনাদের হাতে নিরীহ জনগণের হত্যার দৃশ্য দেখানো হয়। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধ নিয়ে গোপন দস্তাবেজ জনসমক্ষে প্রকাশ করে দেয় উইকিলিক্স, যার ফলে সংস্থাটি মার্কিন রোষানলে পড়ে।

উইকিলিক্সের প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে গত দশকের শুরুর দিক থেকেই মার্কিন ও যুক্তরাজ্য সরকার আইনী প্রক্রিয়া শুরু করে। নিজেকে বাঁচাতে তৎকালীন বামপন্থী শাসনাধীন ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেন আসাঞ্জ। কিন্তু ২০১৯ সালে কট্টর দক্ষিণপন্থী লেনিন মোরেনো ইকুয়েডরে  সরকার গড়ার পরে তাঁর রাজনৈতিক শরণার্থীর আবেদন খারিজ করে লাতিন আমেরিকার দেশটি। তারপর থেকে তিনি দক্ষিণ লন্ডনের বেলমার্শ জেলে বন্দি। তাঁকে মার্কিনদের হাতে তুলে দিলে সেই দেশের কঠিন আইনে তাঁর ১৭৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।

অন্যদিকে রাশিয়ার পুতিন-বিরোধী দক্ষিণপন্থী শিবিরের কিছু সাংসদ কিছুদিন আগে দাবি করেন যে গার্শকোভিচ কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার দ্বারা নিপীড়িত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বিরোধী নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বিনিময় করা হোক। তাঁরা দাবি করেছেন যে ট্রাম্প কে রাশিয়ায় রাজনৈতিক শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া হোক কারণ মার্কিন দেশে তিনি তাঁর সরকার-বিরোধীতার কারণে আইনী নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।

ওবুকভ ও তাঁর দল কেপিআরএফ পুতিনের বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পরে তিনি সহ রুশ সাংসদ দুমার ৩২৪ জন সদস্যের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট।

Leave a comment
scroll to top