বিচার ব্যবস্থায় সংশোধনী প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্তান নেওয়ার জন্য লিকুড পার্টির নেতা ও ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে রবিবার বরখাস্ত করেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল ইজরায়েল। রাজধানী জেরুসালেম এবং তেল আভিভে কয়েক লক্ষ মানুষ রাস্তা আটকে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে।
২০২২ সালের শেষে সংসদীয় নির্বাচনে ক্ষমতায় এসেছিলো ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে ডানপন্থী বলে পরিচিত অতিডান, ধর্মীয় ইহুদিবাদী সংগঠনগুলোর জোট। লিকুদ পার্টির সাথে, নেতানিয়াহু অত্যন্ত ডানপন্থী ধর্মীয় জায়নবাদ এবং ইহুদি শক্তি দলগুলির পাশাপাশি শাস এবং ইউনাইটেড তোরাহ ইহুদিবাদ সহ ছোট ধর্মীয় দলগুলির সাথে জোট করে নভেম্বরের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন জিতেছিলেন।
সম্প্রতি বিচারিক সংশোধনীর প্রস্তাবের বিরুদ্ধে কথা বলায় ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও লিকুদ পার্টির নেতা গ্যালান্টকে বরখাস্ত করেন নেতানিয়াহু। গ্যালান্টকে বরখাস্ত করার পর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর আবাসস্থলের সামনে জমায়েত হন প্রতিবাদীরা। সেখানে পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। গ্যালান্ট বরখাস্ত হওয়ার আগে বক্তব্য রাখেন যে এই বিচারিক সংশোধনী প্রস্তাব পাশ হলে ইজরায়েল রাষ্ট্র দুর্বল হয়ে যাবে।
প্রতিবাদীরাও জানিয়েছেন যে এই প্রস্তাবটি পাশ হলে ইজরায়েলের গণতন্ত্র ধূলিসাৎ হয়ে যাবে এবং ইজরায়েল একটি স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হবে। প্রসঙ্গত, এই প্রস্তাবটিতে ইজরায়েল সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা হ্রাস করে ইজরায়েলি সংসদের ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা বলা আছে। এমনকী সংসদে পাশ হওয়া কোনো আইনের বিরুদ্ধেও সুপ্রিম কোর্ট কিছু বলতে পারবেনা বলে বলা হয়েছে।
অপরদিকে এই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নিউ রাইট পার্টির নেতা নাফতালি বেনেট সতর্ক করে বলেছেন যে ১৯৭৩ সালের যুদ্ধের পর থেকে ইসরাইল সবচেয়ে বড় বিপদের মধ্যে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু রবিবার ট্যুইট করে বলেছেন, বিচারিক সংশোধনী প্রস্তাব নাকচের বিরুদ্ধে আমাদের দৃঢ় হয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দাড়াতে হবে।
এই চলমান রাজনৈতিক প্রতিবাদের মধ্যেই নেতানিয়াহু সোমবার, ২৭শে মার্চ, বিচারিক সংশোধনী প্রস্তাবের উপর কথা বলবেন বলে জানা গেছে। সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে যে তিনি হয়তো এই প্রস্তাবকে আপাতত স্থগিত করার কথা বলবেন। এই প্রস্তাবটি স্থগিত করা হতে পারে এমন আভাস পাওয়ার পর ইজরায়েল সংসদ নেসেটের বেশ কিছু নেতানিয়াহু সরকারের সদস্য পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন।