বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে জমি বিবাদ সংক্রান্ত শুনানিতে চিঠি পাঠিয়ে ডেকে পাঠালো। রবিবার, ১৯শে মার্চ, সেনের শান্তিনিকতনের বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৯শে মার্চ অমর্ত্য অথবা তার কোনও প্রতিনিধি যেন বিতর্কিত জমি নিয়ে শুনানির জন্য বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অ্যাডমিশন বিল্ডিংয়ের কনফারেন্স হলে উপস্থিত হন।
বিশ্বভারতীর অভিযোগ, সেন ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন। তাই তাকে কেন ওই জমি থেকে উচ্ছেদ করা হবে না,তার কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
দিন কয়েক আগে অধ্যাপক সেন, তাঁর বাবা আশুতোষ সেনের পরিবর্তে নিজের নাম জমির লিজ হোল্ডার হিসাবে নথিভুক্ত করার জন্য আবেদন করেন । বোলপুর ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরে তার শুনানি ছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অমর্ত্য সেনের এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবীরা। কিন্তু দীর্ঘ সওয়াল জবাবের পরেও মীমাংসা হয়নি।
২৯শে জানুয়ারি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল, যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১,১৩৪ একর জমির মধ্যে ২০১৮ সালে ৭৭ একর জমি দখল করা হয়েছিল। গত চার বছরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৫ একর জমি পুনরুদ্ধার করেছে অবৈধ দখলদারের কাছ থেকে। বাকি জমি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিম্যাল জায়গা অমর্ত্য সেনের বাড়ি প্রতীচী-র মধ্যে ঢুকে রয়েছে বলে অভিযোগ।
যদিও অর্থনীতিবিদ সেন দাবি করেন ঐ জমির কিছুটা কেনা এবং কিছুটা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে লিজে নেওয়া।
৩০ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনে অমর্ত্য সেনের বাড়ি পৌছান। বিশ্বভারতীর দাবির বিপক্ষে সরকারি দলিলও হাজির করেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও দমতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয়।
৯ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেনের উদ্দেশ্যে জমি বিবাদ সংক্রান্ত নোটিশ জারি করলেও আবার তা সাথে সাথে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলো অজানা কারণে। এবার আজ রবিবার অর্থনীতিবিদ সেনকে চিঠি পাঠিয়ে শুনানিতে তলব করলো বিশ্বভারতী। প্রসঙ্গত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ইউনিয়নের শাসক ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাথে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ উঠেছে বার বার। অন্য দিকে অমর্ত্য সেন বাম ঘনিষ্ঠ বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত। তিনি বিজেপি শাসিত ইউনিয়ন সরকারের কঠোর সমালোচক।