বিশ্ব দ্রুত পরমাণু বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এই বিপর্যয় এড়ানো যাবে না, এমনটাই মনে করেন মার্কিন রাজনৈতিক ভাষ্যকার, অ্যারিযোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা তত্ত্বের শিক্ষক ও দার্শনিক নোয়াম চমস্কি।
রুশ গণমাধ্যম আরটিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে শনিবার, ২১শে জানুয়ারি, চমস্কি বলেন, এই সম্ভাব্য বিপর্যয়ের পেছনে জলবায়ু ও অন্য সমস্যাগুলোর যৌক্তিক সমাধানে বিশ্ব নেতাদের ব্যর্থতার কারণটি সক্রিয় রয়েছে।
চমস্কি যোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ‘ডুমস ডে ক্লক’ মধ্যরাতের দিকে এগিয়ে গেছে যা মানবতার বিলুপ্তির ইঙ্গিত দেয়। এই ঘড়িকে বিশ্ব মানবতার পরমাণু বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
চমস্কি আরও বলেন, মানবতার জন্য প্রধান হুমকি হচ্ছে – তাদের সামনে পরমাণু যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া, জলবায়ু বিপর্যয়েরও ঝুঁকি রয়েছে। এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে যৌক্তিক আলোচনা হওয়া জরুরি।
গত কয়েক বছর ধরে এই তিনটি বিষয়েরই অবনতি হয়েছে উল্লেখ করে চমস্কি বলেন, এজন্য সম্ভাব্য যে বিপর্যয় নেমে আসবে তা দ্রুতই ঘটবে এবং এড়ানো যাবে না।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বৃহস্পতিবার বলেছেন, যারা ইউক্রেনে রাশিয়ার পরাজয় দেখতে চায় তাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ প্রচলিত যুদ্ধে হেরে গেলে তা পরমাণু যুদ্ধের সূচনা করতে পারে।
মেদভেদেভের এই বক্তব্যের পর নোয়াম চমস্কি সম্ভাব্য পরমাণু বিপর্যয়ের কথা বললেন।
উল্লেখ্য, ১৯৪৫ সালে শেষ হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। জাপানে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ এবং কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যুর ঘটনা বিশ্বকে দিয়েছিল বড় ধাক্কা। এসময় মানুষকে সতর্ক করতে নতুন এক উদ্যোগ গ্রহণ করেন বিজ্ঞানীরা। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৪৭ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় ডুমসডে ক্লকের বুলেটিন। সেই থেকে প্রতি বছর এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়ে আসছে।
এ প্রতীকী ঘড়ি আমাদের গ্রহকে ঘিরে ঘনিয়ে ওঠা নানা বিপদের মাত্রা অনুযায়ী চলাফেরা করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ‘ডুমস ডে ক্লক’ মধ্যরাতের দিকে এগিয়ে গেছে যা মানবতার বিলুপ্তির ইঙ্গিত দেয়। অর্থাৎ মানুষ বড় ধরনের বিপর্যয় বা ভয়াবহ যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে। নোয়াম চমস্কি তাঁর বক্তব্যে সেটাই স্মরণ করিয়ে দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।