শি জিনপিং-এর নেতৃত্বাধীন চীনের ক্রমবর্ধমান দৃঢ় অবস্থানের কথা মাথায় রেখে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-জাপান জোটের সম্পর্ক আরও জোরদার করতে সম্মত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা ফুমিও।
জাপানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এনআইচকে জানায়, স্থানীয় সময় শুক্রবার, ১৩ই জানুয়ারি, ওয়াশিংটন ডিসিতে এক বৈঠকে মিলিত হন এই দুই মিত্র দেশের রাষ্ট্রপ্রধান।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাপ্তরিক বাসভবন হোয়াইট হাউসে আলোচনার শুরুতে বাইডেন বলেন, “আমি মনে করি না যে, এর আগে এমন কোনো সময় ছিল যখন আমরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) জাপানের সাথে এতটা ঘনিষ্ঠ ছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের মধ্যকার জোট এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, জাপানের প্রতিরক্ষার প্রতি পূর্ণমাত্রায়, পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং পুরোপুরিভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এসময় কিশিদা বলেন, নিরাপত্তা পরিবেশ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন আরও গুরুতর ও জটিল হয়েছে।
তিনি যোগ করেন, আঞ্চলিক শান্তি ও সমৃদ্ধিতে অবদান রাখার লক্ষ্যে জাপান নতুন নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়ন করেছে।
এদিন শীর্ষ সম্মেলনের পরে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেন কিশিদা এবং বাইডেন।
এতে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীন ও উত্তর কোরিয়ার কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে মৌলিকভাবে জোরদার করার জন্য জাপানের প্রশংসা করেছেন বাইডেন।
এতে এও উল্লেখ করা হয়েছে, দুই নেতা এটি পুনঃনিশ্চিত করেছেন যে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন-জাপান জোট শান্তি, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির ভিত্তি হিসাবে বিদ্যমান রয়েছে।
এছাড়া তাইওয়ান অঞ্চলজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করার পাশাপাশি ওই অঞ্চলে যে কোনো সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানকে উৎসাহিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, জি-৭ (গ্রুপ অব সেভেন) হচ্ছে জাপান, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে গঠিত একটি সংঘ। এ সাতটি দেশ হচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল স্বীকৃত বিশ্বের সাতটি মূল উন্নত অর্থনীতির দেশ। এরা বৈশ্বিক সম্পদের শতকরা ৬৪ ভাগের প্রতিনিধি (২৬৩ লক্ষ মার্কিন ডলার)।
আগে এটি ছিল ‘জি-৮’, কিন্তু ২০১৪ সালের ক্রিমিয়া সংকটে রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতার কারণে সেই বছরের ২৪শে মে রাশিয়াকে জি-৮ থেকে বাদ দেয়া হয়।
চলতি বছরের মে মাসে জাপানের হিরোশিমায় অনুষ্ঠিতব্য জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আগে, জোটের দেশগুলোর নেতাদের সাথে আলোচনা করতে ফ্রান্স, ইতালি, ব্রিটেন, কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর ঘোষণা করেন কিশিদা। এরই মধ্যে ইউরোপীয় দেশগুলোতে সফর শেষ করেছেন কিশিদা।