Close

আগুন লেগে ভস্মিভূত দমদমের বস্তি; সর্বশান্ত বাসিন্দারা

শনিবার সকালে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেল দমদম মেলাবাগান বস্তির অধিকাংশ ঝুপড়ি। ইস্টপোস্ট বাংলার তরফে গ্রাউন্ড রিপোর্ট।

নিয়ন্ত্রণে আগুন, কিন্তু সবকিছুই আগুনের গ্রাসে। চলছে উদ্ধারকার্য
নিয়ন্ত্রণে আগুন, কিন্তু সবকিছুই আগুনের গ্রাসে। চলছে উদ্ধারকার্য

১৩ই মার্চ, শনিবার, সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ হঠাৎই আগুন লাগে ঝুপড়িতে। তারপর একেরপর এক বিষ্ফোরিত হয় গ্যাস সিলিন্ডার। নিমেষে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে গোটা বস্তিতে। বস্তির পেছনে কুড়োনো ভাঙাচোরা প্লাস্টিকের স্তুপ থাকায় বিপত্তি বাড়ে। অগ্নিকান্ড এতটায় ভয়াবহ ছিল যে দেড় কিলোমিটার দূরে দমদম জংশন রেল স্টেশনের আকাশ কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। তদন্তের পর প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে মূলত প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক জাতীয় আবর্জনা পোড়ার ফলেই এই কালো ধোঁয়া তৈরি হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ যদিও এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। তবে দমকলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে আগুন লাগার কারণ জানতে ফরেন্সিক তদন্ত চলছে। অগ্নিকান্ডের ভয়াবহতার জেরে দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দমদম রোডে আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল।

আগুন-এর শেষে
বাদ যায়নি জীবন ধারণের সরঞ্জাম। ছাইয়ের গাদায় চাকা

শনিবার আগুন লাগার পর প্রাথমিকভাবে খাল থেকে জল তুলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে সময়মতো দমকল পৌঁছয়। কিন্তু জায়গাটি অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় উদ্ধারকাজ শুরু করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। দমকলের তরফ থেকে উদ্ধারকল্পে প্রথমে পাঁচটি এবং তারপর আরও পাঁচটি ইঞ্জিন মোতায়েন করা হয়। এমনকি পাম্প বসিয়ে খালের জল তুলেও চলে আগুন নেভানোর প্রচেষ্টা। অবশেষে বিকেল পাঁচটা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেলে ফুটে ওঠে ধ্বংসের চিত্র। একের পর এক বেরোতে থাকে গবাদি পশুর ঝলসানো মৃত-অর্ধমৃত দেহ। সর্বস্ব হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাসিন্দারা।

তখনও আগুন জ্বলছে ধিকিধিকি।
রিলিফ সেন্টারে অস্থায়ী সংসার

এইদিন রাতেও চলেছে উদ্বারকাজ। প্রশাসন সূত্রে খবর ইতিমধ্যেই অগ্ধিকান্ডে বাস্তুহারা বাসিন্দাদের সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে সুরের মাঠ সংলগ্ন রবীন্দ্র ভবনে। এখানে ২৬১ জন মানুষের থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। যদিও এরপর বাসিন্দাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান এখনও অজানা। অগ্নিকাণ্ড সংক্রান্ত তদন্ত চলার কারণে ক্ষয়ক্ষতির চুড়ান্ত পরিমাণও এখনও জানানো সম্ভব হচ্ছে না প্রশাসনের তরফে।

ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর সাংবাদিকতার ছাত্রী ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, যিনি শ্রম, কৃষি ও রাজনীতি নিয়ে রিপোর্টিং করেন।

Leave a comment
scroll to top